হেঁটে ৮৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি বাবা-ছেলের

বৃদ্ধ ছাদেক আলী সরদার (৬৬)। গত ২০০৬ সালে সেনাবাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন পদে অবসর নিয়েছে তিনি। তার শরীর চর্চার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান হেঁটেই ঘুরে দেখার স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। এরই মধ্যে শুরু করেছে তার স্বপ্নযাত্রা। তার সফর সঙ্গী হয়েছেন ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩০)। ইতোমধ্যে তারা পর্যাক্রমে ৮৩০ কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন।
সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জামালপুর শাহী মসজিদে আসা ওই ভ্রমণকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তারা গাইবান্ধা শহরের মধ্য গোবিন্দপুরের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছাদেক আলী সরদার তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে চলা ভ্রমণ অব্যাহত রেখেছেন।
এর আগে গত ১৪ই ডিসেম্বর সকালে গাইবান্ধা ছাদেক চত্বর থেকে ফুলছড়ি থানা চত্বর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে যাত্রা শুরু করেন তারা।
ধারাবাহিকতায় গাইবান্ধার জেলা বিভিন্ন ইতিহাস-ঐতিহ্য ও দর্শণীয় স্থান সমূহ হেঁটে পদার্পন করেছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটসহ মোট ৩২টি স্থানে ৮৩০ কিলোমিটার দীর্ঘপথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন ওই বাবা-ছেলে।
ইতিমধ্যে বিশেষ স্থানে অবস্থিত হযরত শাহ সুলতানের মাজার, হযরত শাহ জামাল (র:) এর মাজার, রাজবাড়ি, জমিদার বাড়ি, গায়েবী মসজিদ, শাহী আমলের সুরা মসজিদ, যাদুঘর, নৌঘাট, সেতু-বন্দর, হাট-বাজারসহ আরও বেশ কিছু আলোচিত ও দর্শনীয় জায়গাগুলোতে হেঁটে চলেছেন তারা। এভাবে আরও বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘপথ হেঁটে যাত্রা করবেন বলে জানিয়েছে ওই ভ্রমণ পিপাসুরা। তবে বাবা-ছেলের ভিশন কী, সে বিষয়ে মন্তব্য দিতে নারাজ তারা।
ভ্রমণসঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাবা-ছেলের মধ্যে যদি সু-সম্পর্ক বজায় থাকে এবং তা যদি বন্ধুসুলভ হয়, তাহলে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যায় অবলীলায়। কিন্তু যদি সেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে তাহলে এক কিলোমিটার তো দূরের কথা, একই ছাদের নিচে থাকাটাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। তাই বাবা-ছেলের মধ্যে সু-সম্পর্ক থাকার পাশাপাশি তা বন্ধুসুলভ হওয়াটাও একান্ত প্রয়োজন। এজন্য আমার বাবার হেঁটে চলার ভ্রমণে সঙ্গী হয়েছি।
সেনা বাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) ভ্রমণকারী ছাদেক আলী সরদার জানান, হেঁটে যাত্রা করবেন, এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল তার। সেটি বাস্তবায়নে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়া শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাপ-বেটার পা গুলোকেই বাহন হিসাবে কাজে লাগিয়ে আমাদের মিশন কে আরও দীর্ঘায়িত করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস।
সুত্র: মানবজমিন