সুন্দরগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিং দুর্বিষহ জনজীবন

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেক এলাকায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ২০ বার লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
কখনো দিনে ১৫-২০ বার, কখনো ১০ মিনিটে তিনবার আবার কখনো ঘন্টায় নয়বার লোডশেডিং হচ্ছে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, কোনো ঋতুতেই বন্ধ হচ্ছে না লোডশেডিং। বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে। এরআগে, স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিং রোধে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাথে গণশুনানি করেও কোন প্রতিকার হয়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে ফ্রিজ, টিভি, ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া শিশু-বয়োবৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও মেলেনি কোন সুরাহা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। পৌর শহরে কিছুটা কম হলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে লোডশেডিং। কখনো কখনো একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে ৪-৫ ঘণ্টার আগে আসে না।
কঙ্কন সরকার নামের একজন সাহিত্যিক পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সুন্দরগঞ্জের কারেন্টওয়ালারা দয়া করে এভাবে আর বিজলীবাতির মত লোডশেডিং এ ফেলবেন না। সারাদিনে যে কতবার এলো গেলো! যদি লোডশেডিং দিতে হয় নির্দিষ্ট সময় দিয়ে তারপর কারেন্ট সাপ্লাই করুন। আমাদের ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্রের মূল্য আছে। কারেন্টের এভাবে ফুরুৎ ফুরুৎ আসা যাওয়াতে নষ্ট হলে আপনারা কি ক্ষতিপূরণ দেবেন!’
ধুমাইটারী চাঁন্দের মোড়ের ব্যবসায়ী রিপন সরকার বলেন, ‘খুবই বিরক্তিতে আছি। বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে কোন কাজ ঠিক মতো করতে পারিনা। কম্পিউটার চালু করতে ৩-৪ মিনিট লাগে। কখনো কখনো কম্পিউটার চালুর আগেই আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। এরইমধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে কম্পিউটার কয়েকবার নষ্ট হয়েছে। ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’
ঝিনিয়া গ্রামের মশিউর রহমান বলেন, ‘আগে এত লোডশেডিং হতো না। এখন সারাদিন কাজ করার পর রাতে ঘুমাতে গেলেই দেখি বিদ্যুৎ নেই। অসহ্য গরমে ঘুমানো যায় না। ঘন ঘন লোডশেডিং যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।’
পিন্টু সরকার নামের একজন বলেন, ‘শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা সুন্দরগঞ্জ। কিন্তু প্রতিদিন নানান কাজের কথা বলে ৮/১০ ঘন্টা লোডশেডিং দিচ্ছেন, যা জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল।
রংপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সুন্দরগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মিলন কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করার যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে। দিনের বেলা অনেক সময় বৈদ্যুতিক লাইনে সমস্যা থাকায় লোডশেডিং হয়। আর রাতে বিদ্যুৎ সাপ্লাই কম হওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে।’