
৩৩ শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে গরুর খামারটি। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই, ভিতরে এত সুন্দর গোছালো একটি গরু পালনের খামার এটি। দৃষ্টিনন্দন খামারটিতে সাড়িবদ্ধ গাভী ও ষাড় খাবার খাচ্ছে। পুরো খামারটিতে আধুনিকায়নের ছোঁয়া। সেডের ভিতরে প্রত্যেকটি গরুর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে আলাদা আলাদা হাউস। রয়েছে গরুর গোসল, চিকিৎসা ও প্রজণনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। এভাবে উন্নত পদ্ধতিতে গরু পালন করে এলাকার দুগ্ধ ও গোস্তের চাহিদা মিটিয়ে সহজেই লাভবান হওয়া সম্ভব। সাঘাটা উপজেলার রামনগর গ্রামের ত্রিমোহনী সেতু এলাকায় এমনই উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতিতে খামার করে গরু পালন সবার দৃষ্টি কেড়েছে। ওই এলাকার শিক্ষিত যুবক রজ্জব খন্দকার নিজের শখ থেকেই মুলত গরুর খামারটি করেছেন।
২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয় এটির কাজ। চলে প্রায় ৯ মাসের বেশি। কয়েক ধাপে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। নাম দেওয়া হয়েছে আরকে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা। মোটাতাজা ও দুগ্ধ উৎপাদনের জন্য ৪১টি শাহীওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু ক্রয় করে খামারের যাত্রা শুরু হয়। ভেটেনারী (সার্জন) চিৎিসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন গমের ভুষি, মুগডাল ভুষি, মশুর ভুষি, সয়াবিন খৈল, কাঁচাঘাস, খর ও লবন ছাড়াও দেশিয় বিভিন্ন দানাদার খাবার দেওয়া হয় গরুকে। ৭জন শ্রমিক সার্বক্ষণিক খামারের কাজে নিয়জিত থাকেন। কর্মরত শ্রমিকরা জানান, এখানে গড়ে প্রতিটি গরু প্রায় দেড়’শ টাকার দেশিয় খাবার খায়। খামারের পরিধি বাড়িয়ে আরও অন্তত দেড়’শ গরু পালনের প্রস্ততি চলছে বলে জানালেন, গরুর দেখাশোনায় নিয়োজিত একই এলাকার বাসিন্দা আবদুর রশিদ। ওই এলাকার বাসিন্দা রুপন মিয়া জানান, বর্তমানে এ খামারটি এলাকার অনেকের কাছেই অনুকরণীয়। খামারের সুন্দর পরিবেশ আর আধুনিক উপায়ে গরু পালন দেখতে প্রতিদিন লোকজন আসেন বলে জানালেন এলাকাবাসী। সরেজমিন গত বুধবার সকালে দেখা গেল, খামারের ৪টি গাভীর দুধ দোহন চলছে। পরিচর্যায় ব্যস্ত রাজু মিয়া জানান, শুরুতেই ৪টি গাভী থেকে প্রতিদিন ৬০-৭০ লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামীতে এখানে প্রতিদিন ৩০০ লিটার দুধ পাওয়া যাবে বলেও জানান। সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রদানের জন্য উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখা হয়।
এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নাজমুল হক জানান, এমন একটি উদ্যোগ এলাকার জন্য প্রসংশনীয়। চিকিৎসা সহায়তা সহ নানা ভাবে ওই খামারে আমাদের পদচারণা আছে। আমাদের লোকজন নিয়মিত ওখানে খবর রাখেন। খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রজ্জব খন্দকার বলেন, খামার করে শুধু ব্যবসা করাই আমার উদ্দেশ্য নয়। এলাকার পুষ্টি চাহিদা মেটানো ও বেকারত্ব দূর করতেও আগামীতে এটি ভুমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।