সমস্যায় জর্জরিত গোবিন্দগঞ্জের গুচ্ছগ্রামবাসীরা

নানা সমস্যায় জর্জরিত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ফুলহার গুচ্ছগ্রামবাসীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, কবরস্থান না থাকায় নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা সংস্কার না করায়, চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়াও পানি সংকট এ এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীর আরও একটি বড় সমস্যা।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, গুচ্ছ গ্রামের অনেকগুলো ঘর পড়ে থাকলেও সেগুলোর সংস্কার না করে নতুন করে আরও ৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নে ফুলহার গুচ্ছ গ্রামে ভূমিহীন, গরিব দুস্থ, অসহায় মানুষের জন্য ১৩০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে গত ৩ বছরে ১০০টি ঘর বরাদ্দ পেয়ে নিম্নবিত্তরা বসবাস করতে শুরু করেন। বাকি ঘরগুলোতে লোকজন না থাকায় বর্ষাকালে ঘরের মেঝের মাটি সরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে, আগের ঘরগুলোতে বসবাসকারীদের নাগরিক সুবিধা বাড়েনি। ৫০০ থেকে ৬০০ মানুষ এখানে বসবাস করলেও পর্যাপ্ত নলকূপ নেই। যেসব নলকূপ রয়েছে সেগুলোর বেশি ভাগ অকেজো। এ ছাড়া এখানকার শিশুরা শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো পাঠশালা নেই।
এ ছাড়া ফুলহার গুচ্ছগ্রামের মানুষ মারা গেলে কবর দেওয়ার মতো কোনো নির্ধারিত স্থানও নেই। এদিকে মসজিদও প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে। বাধ্য হয়ে মুসল্লিরা ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী গ্রামে নামাজ পড়তে যান।
বসবাসের শুরু থেকেই স্থানীয়দের দাবি গুচ্ছগ্রামের পাশেই নদী তীরবর্তী যে খাস জমি রয়েছে সেখানে তাদের জন্য একটি মসজিদ ও কবর স্থান করে দেওয়া হোক।
উপজেলা প্রশাসন ভাষ্যমতে, গুচ্ছগ্রামের যদি কোনো সমস্যা থাকে তা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কাটাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিক মাহমুদ গোলাপ বলেন, ‘ফুলহার গুচ্ছ গ্রামে বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও তা সমাধান না করে নতুন করে আরও ৬০টি ঘর নির্মাণ করে সরকারি অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। অথচ ৩ বছর ধরে সেখানে বসবাসকারীরা নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে জীবনযাপন করছে। তাই তাদের সমস্যাগুলো আগে সমাধান করা দরকার। এ ব্যাপারে সরকার ও প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।’
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাঈদ বলেন, ‘ফুলহার গুচ্ছগ্রামের রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্যান্য যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে অপ্রয়োজনীয় নতুন ঘর নির্মাণের নামে সরকারি অর্থ অপচয় না করে বসবাসকারী মানুষের নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির দাবি স্থানীয়দের।’
সুত্র: আজকের পত্রিকা