গাইবান্ধাগাইবান্ধা সদর

ভরাট হচ্ছে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের জলাধার জানেন না সিইও, ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ

ভরাট করা হচ্ছে গাইবান্ধা জেলা পরিষদ কার্যালয়ের প্রবেশমুখে বহু বছরের পুরনো জলাধারটি। ইতোমধ্যে বালুও ফেলা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না প্রতিষ্ঠানটির সিইও আব্দুর রউফ তালুকদার। অন্যদিকে জলাধার ভরাট বন্ধে কর্তৃপক্ষকে পত্র দিয়েছে পৌরসভা। এদিকে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের জলাধার ভরাট করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি, মার্কেট নিয়ে তালবাহানা ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন ব্যবসায়ীরা।

জেলা পরিষদ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের আয়োজনে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের ডিবি রোডের হকার্স মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন- জেলা পরিষদ দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম, শাহিদুদ্দোজা চৌধুরী সুমন, নুর মোহাম্মদ বাবু, আইনুল মিয়া, রফিকুল আজাদ, আহসান হাবীব, জেলা যুব জোটের সভাপতি সুজন প্রসাদ প্রমুখ।

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, নিজের মেয়াদকালের শেষ সময়ে জলাধার ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ ও জায়গা লীজ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার। জলাধারটি ভরাট হলে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে দাবী করে ব্যবসায়ীরা বলেন, দুই বছর আগে মার্কেটে দোকান বরাদ্দের নাম করে ৬২ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোন রসিদ ছাড়াই প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নেয়া হয়। কিন্তু‘ মার্কেট নির্মাণ করা হয়নি। এখন টাকাও ফেরৎ দেয়া হচ্ছে না।

জেলা পরিষদ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, রাতের বেলা তার বাসায় বিছানায় বসে তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকার বান্ডিল ব্যাগে ভরে নিয়েছেন। এখন মার্কেটও নাই, দোকানও নাই, ব্যবসায়ীদের টাকা ফেরৎ বা কোন রসিদ দেয়ারও নাম নাই।

মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা জলাধার ভরাট বন্ধ করে মার্কেট নির্মাণ, টাকা ফেরৎ ও প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দোকান বরাদ্দের দাবী জানান। মানববন্ধনে জেলা পরিষদের ব্যবসায়ীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নিয়ে দাবীর সাথে একাতœতা প্রকাশ করেন ।

এদিকে জেলা পরিষদের প্রবেশমুখে জলাধার ভরাট বন্ধ করতে গত শনিবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান বরাবরে পত্র দিয়েছেন গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মতলুবর রহমান। পানি নিষ্কাশনের জলাধার ভরাট ইমারত নির্মাণ বিধিমালার পরিপন্থী’ উল্লেখ করে জলাধার ভরাটের উদ্দেশ্যে রাস্তায় রাখা বালু অপসারণের অনুরোধ করেন পৌর মেয়র। কিন্তু‘ রোববারও গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়কে জেলা পরিষদের প্রবেশমুখে জলাধার ভরাটের উদ্দৈশ্যে রাখা বালুর স্তুপ অপসারণ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, জলাধার ভরাটের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তই তিনি জানেন না। সিইও বলেন, কেন, কি কারনে জলাধার ভরাট করা হচ্ছে, ভরাটের জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তাও তার অজানা। তবে তিনি পৌরসভার একটি পত্র পেয়েছেন। পত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এনিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, এটি কোন জলাধার নয়, এটি নীচু একটি ডোবা। ডোবার ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে দাবী করে তিনি বলেন, মামলা মোকদ্দমাসহ নানা জটিলতা শেষে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। মন্ত্রণালয় মার্কেট নির্মাণের যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি করেছে। কমিটির প্রতিবেদনের পর পরবর্তী ব্যবস্থা। দোকান বরাদ্দের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

সুত্র: আমারজেলা ডট নিউজ

Back to top button