বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত পাহাড়

দুর্গম পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি। এখানে দুর্গম পাহাড়ের কারণে উন্নয়ন থমকে যায় অনেকাংশে। এছাড়া রয়েছে নানা আঞ্চলিক রাজনৈতিক জটিলতা। অতীতের বিভিন্ন রাজনৈতিক সরকারের তেমন সুনজর ছিল না রাঙামাটির প্রতি। যে কারণে পার্বত্যাঞ্চলের অন্যতম জেলা রাঙামাটি অনুন্নত থেকে গেছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে কথা দিয়েছিল, ক্ষমতায় আসতে পারলে রাঙামাটির চিত্র বদলে দেবে। এবার কথা রেখেছে দলটি। সরকারের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার পর রাঙামাটিতে রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে দলটি। এ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া পাহাড়ের প্রতিটি কিনারায় পৌঁছে গেছে।
আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশের মতো পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে।
রাঙামাটির ১০ উপজেলার বেশিরভাগ কাপ্তাই হ্রদকে ঘিরে অবস্থান। এছাড়াও কিছু উপজেলা রয়েছে অত্যন্ত দুর্গম। এসব বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করে পাহাড়ি জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। যেসব এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করা যাচ্ছে না সেখানে সোলার বিদ্যুৎ স্থাপন করা হচ্ছে। মানুষ যেন অন্ধকারে না থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ রাঙামাটি অঞ্চলের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, রাঙামাটির জেলা সদর, কাউখালী উপজেলা, কাপ্তাই উপজেলায় অনেক আগে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। সম্প্রতি বিলাইছড়ি উপজেলায় বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছানো হয়। বর্তমানে বরকল উপজেলা, জুরাছড়ি এবং বিলাইছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিতে দ্রুত কাজ চলছে।
এছাড়াও নানিয়ারচর, লংগদু এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা অনেক আগে থেকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় এসেছে। তবে প্রশাসনিক ভাবে উপজেলাগুলো পার্শ্ববর্তী খাড়াছড়ি জেলা থেকে বিদ্যুৎ সেবা নিয়ে থাকে।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ রাঙামাটি অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার বলেন, রাঙামাটির কোনো এলাকা আর অন্ধকারাচ্ছন্ন নেই। সব স্থানে সরকার বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ রাঙামাটি অঞ্চল থেকে সেবা নিচ্ছে জেলার ৬০ হাজার মানুষ। অথচ ১০ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩২ হাজার।
তিনি জানান, রাঙামাটিতে আগে ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা থাকলেও বর্তমানে এর চাহিদা বেড়ে ৩০ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। কুতুকছড়ি পাওয়ার স্টেশনের কাজ শেষ। এ স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। পাশাপাশি ভেদভেদী সাবস্টেশন এবং মাঝেরবস্তি সাবস্টেশনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ বছর শেষে স্টেশনগুলো থেকে বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান এই প্রকৌশলী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক উজ্জ্বল বড়ুয়া বলেন, সরকারের নির্দেশে রাঙামাটির সব উপজেলায় বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে দুর্গম উপজেলার কয়েকটি গ্রাম বা এলাকার বাসিন্দারা এখনো বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছেন না। এর মূল কারণ হলো-এলাকাগুলো বেশি দুর্গম। তবে সরকার ওইসব এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে।