গাইবান্ধাগাইবান্ধা সদর

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণ করে নতুন ভবনের দাবি নিবাসী শিশুদের

গাইবান্ধা জেলার শিশু অধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং এর অংশ হিসেবে গত ০৫ ডিসেম্বর রবিবার সকালে সরকারি শিশু পরিবার বালকে পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে এনসিটিএফ সদস্যরা।

নিয়মিত মনিটরিং কর্মসুচীর অংশ হিসেবে ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহায়তায় জাতীয় পর্যায়ে শিশু অধিকার বাস্তবায়নকারী শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) গাইবান্ধা জেলা কমিটির সদস্যরা এ পরিদর্শন কার্যক্রমে অংশ নেন।

পরিদর্শনের সময় এনসিটিএফ সদস্যরা শিশু পরিবারের অভ্যন্তরে শিশুদের আবাসিক কক্ষ, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা, খাবার ব্যবস্থাপনা, ক্রীড়া ও বিনোদন, নিরাপত্তাসহ সকল বিষয়ে সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। নিবাসী শিশুদের সাথে মতবিনিময় করে তাদের সমস্যা ও সুপারিশ গুলো জানার চেষ্টা করেন।

এসময় আরো জানা যায়, শিশু পরিবারে একজন খন্ডকালীন চিকিৎসক শিশুদের চিকিৎসা পরামর্শ দেয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে উক্ত পদে কোন চিকিৎসক নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত কম্পাউন্ডার শিশুদের সাধারণ অসুস্থতায় প্রাথমিক সেবা প্রদান করছে। শিশু পরিবারে পানি নিষ্কাশন বা ড্রেনেজের ব্যবস্থা অনেক নাজুক। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে খেলার মাঠসহ আবাসিক প্রাঙ্গণে পানি জমে থাকে। এছাড়াও নিবাসী শিশুদের দক্ষতা উন্নয়নে নিজস্ব প্রশিক্ষণ কক্ষ ও সরঞ্জামের সংকট রয়েছে। ফলে শিশুদের ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও নিজ প্রতিষ্ঠানে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় কিছু শিক্ষার্থীদের জেলার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ড্রাইভিং, কম্পিউটার ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
এসময় শিশুরা জানায়, তাদের বর্তমানে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। যেকোনো বিষয়ে উপ-তত্ত্বাবধায়ককে জানালে তিনি তা সমাধানের ব্যবস্থা করেন।

শিশু পরিবার এর উপ-তত্ত্ববধায়ক সুমন সরকার বলেন, বর্তমানে আবাসিক ভবনের অভাবে শিশুরা অনেকটা সমস্যায় রয়েছে। পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে আমাদের সমস্যা আনেকটা দুর হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ঘাঘট, তিস্তা ও যমুনা পরিবারে মোট ৮০ জন নিবাসী অবস্থান করছে এখানে। তাদের মধ্যে সবাই বিভিন্ন স্কুলে লেখাপড়া করছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে নিবাসীদের বরাদ্দকৃত অর্থে তাদের জন্য বিষয়ভিত্তিক গৃহ শিক্ষক, ধর্মীয় শিক্ষক, নাচ ও গানের শিক্ষক দ্বারা সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলো চালু রয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় ৮ টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধে গেটে সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে গেটে পোশাকধারী আনসার নিয়োগের বিষয়ে পরিচালনা কমিটিতে উপস্থাপন করবেন বলে জানান তিনি।
এসময় এনসিটিএফ সদস্যরা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পরামর্শ দেন এবং মশকনিধনে পৌরসভার সহযোগিতা নেয়ার জন্য বলেন। এছাড়াও নিবাসী শিশুদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সেমিনার আয়োজনের পরামর্শ প্রদান করেন।

পরিদর্শনে অংশগ্রহণ করেন সেভ দ্য চিলড্রেন এর গাইবান্ধা জেলা ভলান্টিয়ার মোঃ তাওহীদ উল ইসলাম তুষার, এনসিটিএফ গাইবান্ধা জেলা কমিটির সভাপতি কে.এইচ. খান রোহান, সহ-সভাপতি সৈয়দা সামিয়া জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক অনিক বর্মন, শিশু সাংবাদিক শেখ আনাস আহম্মেদ, মারিয়া জাহান অর্পা, চাইল্ড পার্লামেন্ট মেম্বার মাহিয়া আক্তার নিহা প্রমুখ।

 

Back to top button