গোবিন্দগঞ্জের প্রাচীন মাস্তা মসজিদ

কায়সার রহমান রোমেল
প্রাচীন মাস্তা মসজিদ। মসজিদটির স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের জন্য ধারণা করা হয় এটি মোঘল আমলে নির্মিত। সুপ্রাচীন এ মসজিদ ইসলামী ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন হয়ে আছে। উত্তরের জেলা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩ কিমি দক্ষিণে এবং কামারদহ ইউনিয়নের ফাঁসিতলা বাজার থেকে ১ কিমি উত্তরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে মাস্তা মসজিদ অবস্থিত। কামারদহ ইউনিয়নের মাস্তা গ্রামের প্রাচীন লাল মসজিদটিই ‘মাস্তা মসজিদ’ নামে পরিচিত। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পুরাতন মসজিদগুলোর মধ্যে স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের অন্যতম নিদর্শন এই প্রাচীন মাস্তা মসজিদ।
এলাকার জনশ্রুতি আছে- এককালে এই এলাকায় বাদশা ফকির নামে একজন প্রভাবশালী ও ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি বাস করতেন। তিনি এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার ও তার উত্তরসূরির আসল পরিচয় আজও মেলেনি। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কোনো সময় নির্মিত হয়েছে তা কোনো সূত্র থেকেই আজও জানা যায়নি। তবে মসজিদের নির্মাণ কৌশল ও মোঘল আমলের মসজিদ স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যের সূত্র ধরে অনুমান করা যায় মাস্তা মসজিদটি মোঘল আমল ১৬ শতকের কোনো এক সময় নির্মিত হয়েছিল।
মাস্তা মসজিদের গঠন শৈলী একদম সাদামাটা। প্রস্থ ১৬ ফুট এবং ৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে মূল মসজিদটিতে সম-আকৃতির ৩টি গম্বুজ আছে। চারকোণে চারটি স্তম্ভ রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৪ ফুট চওড়া দেওয়ালের কারণে মসজিদের ভেতর অংশের আকৃতি প্রস্থে ৭ ফুট আর দৈর্ঘ্যে ২৬ ফুট। ভেতরে দুই সারিতে নামাজ আদায় হয়ে থাকে। মসজিদের কোনো জানালা নেই, প্রবেশ পথ ৩টি। ভেতরে কোনো কারুকাজ নেই। মুসল্লি আধিক্যের কারণে সম্প্রতি মসজিদটির সামনের অংশ বর্ধিত করে নামাজের স্থান করা হয়েছে।
প্রাচীন মাস্তা মসজিদ ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় যেকোনো যানবাহনেই গোবিন্দগঞ্জের ফাঁসিতলা বাজারে এসে সেখান থেকে ১ কিমি দূরত্বে রিকশা-ভ্যান কিংবা হেঁটে যাওয়া যায়। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের প্রাচীন মাস্তা মসজিদ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ আর যত্নের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে। প্রাচীন এই মসজিদটি সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।