গাইবান্ধায় বৈরী আবহাওয়া: বৃষ্টিভেজা শীতে কাবু চাষিরা নামেনি ফসলে

মাঘের শেষে বৃষ্টিতে গাইবান্ধার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলার বেশির ভাগ জায়গায় শুক্রবার (০৪ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকেই বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া আর বজ্রপাত শুরু হয়। গাইবান্ধায় শুক্রবার সকালটা ছিল বৃষ্টিভেজা। দুপুরের পর একটু রোদ্দুর। তারপর আবার আকাশ মেঘলা হয়ে যায়। টানা বৃষ্টিতে অনেকটা থেমে যায় জনজীবন। বৈরী আবহাওয়া আর বৃষ্টিভেজা শীতে কাবু এ অঞ্চলের চাষিরা আজ নামেনি ফসলের মাঠে।
বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে জানা যায়, চলতি সপ্তাহে গাইবান্ধাসহ সারাদেশে তাপমাত্রা ওঠানামা করলেও, শীতের দাপট কমেনি। এরমধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে গাইবান্ধায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ো হাওয়া দুপুরের পরও বয়ে চলেছে। একইসঙ্গে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত তীব্র ও বিস্তৃত বজ্রপাতের সম্ভাবনার পূর্বাভাস দেওয়া হয়। এদিন সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রাণঘাতী বজ্রপাতের ঝুঁকি থাকায় চাষিদের ফসলের মাঠে যেতে নিরুৎসাহিত করে সাধারণ মানুষকে ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়। আবহাওয়া পূর্বাভাসে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়।
বর্তমানে শীতে এ জেলার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির উপরে থাকলেও, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে গাইবান্ধাসহ প্রায় সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে কনকনে হাওয়ায় বেড়েছে ঠান্ডার তীব্রতা। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর ও সদর উপজেলা থেকে গাইবান্ধা ডট নিউজের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা জানান, শীতের সাথে বৃষ্টিময় আবহাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে ঠান্ডার মাত্রা। কনকনে হাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন।
ফুলছড়িতে বৃষ্টির সাথে বাতাসের কারণে ঘর থেকে কাজে বের হতে না পেরে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির কারণে আরো জেঁকে বসেছে শীত। ব্যাহত হচ্ছে বোরো মৌসুমে ধান লাগানোসহ অন্যান্য কৃষিকাজ। সাঘাটায় দিনভরই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। থেমে থেমে বৃষ্টির সাথে হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বৈরী আবহাওয়ায় থমকে গেছে এখানকার জনজীবন। পলাশবাড়ীতে বৃষ্টির কারণে অলস সময় পার করছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। বৃষ্টিতে লোকজন ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় যান চলাচলও কমে গেছে। বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় কনকনে ঠান্ডায় কাবু সুন্দরগঞ্জের চাষিরা আজ বজ্রপাতের ঝুঁকি নিয়ে ফসলের মাঠে নামেনি। বৈরী আবহাওয়ায় সাদুল্লাপুরেও ফসলের মাঠে কৃষক-কৃষানির দেখা মেলেনি।
একদিকে গা হীম করা কনকনে ঠান্ডা বাতাস, অন্যদিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। মাঘের শীতে হঠাৎ বৃষ্টিতে জেলা শহরে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। বৃষ্টি ও ঠান্ডায় অনেকে কাজ ফেলে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে চলে যান। গুরুত্বপূর্ণ কোনও কাজ ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘরের বাইরে বের হননি। এমন টানা বৃষ্টিতে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। হঠাৎ নামা এ বৃষ্টি বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের প্রকোপ। শুক্রবার জেলা শহরের কাঁচা বাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো কম। বৃষ্টির কারণে অনেকেই বাজার যায়নি। ঝড়ো হাওয়ার কারনে সারাদিনে কয়েক দফা বিদ্যুৎ বিভ্রাটও সহ্য করতে হয় শহরবাসীকে। এ ছাড়া সড়কগুলোতেও যান চলাচল ছিলো স্বাভাবিক দিনের চেয়ে অনেক কম।