গাইবান্ধাগাইবান্ধা সদর

গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

কায়সার রহমান রোমেল
গাইবান্ধা ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ‘গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ শিরোনামে জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখা বইয়ের তৃতীয় সংস্করনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। রবিবার (০১ আগস্ট) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গাইবান্ধা ফাউন্ডেশন।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদেকুর রহমান। তিনি বলেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক এ রকম প্রকাশনা জেলার মানুষের জ্ঞানের পরিধি আরও বাড়াতে সাহায্য করবে। বইটির মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তাদের শেকড়ের সন্ধান পাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন। তিনি বলেন, জাতীয় ইতিহাসকে পূর্ণতা দিতে আঞ্চলিক ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম। একটি দেশের অভ্যন্তরে প্রতিটি ভিন্ন অঞ্চলের রয়েছে স্বতন্ত্র সব বৈশিষ্ট্য, রয়েছে স্বতন্ত্র ইতিহাস। অঞ্চলভিত্তিক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বা ইতিহাসের সামগ্রিক চিত্র আহরণ করা সম্ভব হলেই কেবল একটি দেশ বা জাতির ক্রমবিকাশের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস প্রণয়ন সম্ভব। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বইটি জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে নতুন প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি এ্যাড. সৈয়দ শামস্-উল আলম হিরু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ্ সারোয়ার কবীর।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, জেলার সাত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) পক্ষে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলম, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি কে.এম রেজাউল হক, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, বীরমুক্তিযোদ্ধা গৌতম চন্দ্র মোদক, জহুরুল কাইয়ুম, দেবাশিষ দাশ দেবু ও অমিতাভ দাশ হিমুন। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, গ্রন্থের লেখক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

গাইবান্ধা ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ‘গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ শিরোনামে জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখা বইয়ের তৃতীয় সংস্করন।

পাঁচশ’ বারো পৃষ্ঠার বইটির তৃতীয় সংস্করণে জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে ২১জন লেখকের ২০টি লেখা স্থান পায়। বইটির লেখক তালিকায় রয়েছেন- আবু জাফর সাবু, মো. আবু সালেক বুলবুল, আজিজুল ইসলাম খন্দকার, গোবিন্দলাল দাস, মাজহারউল মান্নান, একেএম শফিকুর রহমান, দেবাশীষ দাশ দেবু, শাহাদত হোসেন লাকু, মজিদ মুকুল, গৌতম চন্দ্র মোদক, জহুরুল কাইয়ুম, শচীন্দ্র কুমার চাকী, সমরেন্দু ভট্টাচার্য, সেকেন্দার আজম আনাম, শাহাবুল শাহীন তোতা, অমিতাভ দাশ হিমুন, খাজা এমএ কাইয়ুম, সুলতান উদ্দিন আহমেদ, সিদ্দিক আলম দয়াল, মো. আলমগীর কবির ও মো. সাদেকুর রহমান।

জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের সম্পাদনায় ‘গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ বইটি প্রকাশে সহযোগী সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন গাইবান্ধার সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদেকুর রহমান ও সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জহুরুল কাইয়ুম। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক গাইবান্ধার কৃতীজন ভাস্কর ড. ময়নুল ইসলাম পল। এসকেএস প্রিন্টার্স থেকে মুদ্রিত বইটির পৃষ্ঠাসজ্জা ও গ্রাফিক্স ডিজাইন করেছেন কনসেপ্ট ইনোভেটিভ কম্যুনিকেশনের কায়সার রহমান রোমেল। এছাড়া জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর ছবি তুলেছেন গাইবান্ধার নন্দিত ফটোসাংবাদিক কুদ্দুস আলম এবং অক্ষর বিন্যাস করেছেন গাইবান্ধা ফাউন্ডেশনের অফিস তত্ত্বাবধায়ক মো. আখতারুজ্জামান স্বপন।

পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। এরআগে শোকাবহ আগস্ট স্মরণে দাড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা ফাউন্ডেশন কৃর্তক প্রকাশিত গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বইটি ১৯৯৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। আর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ পায় ২০০২ সালে। এরপর দীর্ঘ ১৯ বছর পর ২০২১ সালে বইটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হলো। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুর রাজ্জাকের সম্পাদনায় বইটির প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিলো ২৯৩। বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ ২০০২ সালে সম্পাদনা করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর। দ্বিতীয় সংস্করণে বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিলো ৩২৩ আর তৃতীয় সংস্করণের পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫১২।

Back to top button