ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত সাদুল্লাপুরের ঘাঘট ব্রিজ

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের বুক চিরে বয়ে গেছে ঘাঘট নদী। এই নদীটির উপর নির্মিত হয়েছে ঘাঘট ব্রিজ। এরই পাশে রয়েছে উপজেলা শহর। এ শহর কিংবা আশপাশে নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। তাই ঈদুল ফিতরে বিনোদন প্রেমীদের ঢল নেমেছে ঘাঘট ব্রিজে। যেন দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছে বিনোদন প্রেমীরা।
ঈদের দিন মঙ্গলবার (৩ মে) বিকেল থেকে উপজেলা শহর ঘেষা ঘাঘট ব্রিজে দেখা যায় হাজারো দর্শনার্থীদের ভিড়। যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে হই-হুল্লোড়ে মেতেছেন বিনোদন পিয়াসীরা।
জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রায় পৌনে ৩০০ গ্রামে ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ২২৭.৯৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের উপজেলাটির জনঘনত্ব প্রায় ১৩০০ বর্গ কিলোমিটার। জনবহুল এই উপজেলায় স্বাধীনতার ৫০ বছরেও গড়ে উঠেনি চিত্তবিনোদন কেন্দ্র। শহরটির প্রাণকেন্দ্রে সরোবরো নামকস্থানে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও কথা রাখেনি কেউ। তাই ওই উপজেলাবাসীর শালীন বিনোদনে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধার বালাশীঘাট, পৌর পার্ক, এসকেএস ইন, ড্রিমল্যন্ডসহ অন্যান্য স্থানে। এতে করে সময়ের অপচয়সহ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে তাদের।
এছাড়া ওইসব কেন্দ্রগুলো দূরে হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে যেতে নানা ভোগান্তিতে পড়ে থাকেন। যার কারণে চিত্ত বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার লাখো পরিবার। শুধু উপজেলাবাসী নয়, এখানকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরাও সহজে বিনোদন উপভোগ করতে পারছেন না।
স্থানীয়রা জানায়, গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাদুল্লাপুর-লক্ষীপুর সড়কের সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজের কোল ঘেষে নির্মাণ করা হয়েছে ৯৯.১০ মিটার ঘাঘট ব্রিজ। এই উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় স্থানীয়দের অবসর কিংবা বিনোদনের মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করার একমাত্র ভরসা ঘাঘট ব্রিজ। এখানে বিনোদন প্রেমী মানুষের উপচেপড়া ঢল নেমেছে। এখন বিনোদন প্রেমীদের কাছে অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে রূপ নিয়েছে এই ব্রিজটি। ঈদের ছুটিতে সাদুল্লাপুরের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য পেশা-শ্রেণির হাজারো মানুষ এখানে ভিড় করছেন।
একদিকে ব্রিজ, অন্যদিকে নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দু’পাশে সারি সারি গাছের নয়নাভিরাম ও নৈসর্গিক দৃশ্য যে কোনো বিনোদন প্রেমী মানুষকে কাছে টানবে। যে কারণে প্রকৃতির নির্মল বাতাস ও বাঁধের নয়নাভিরাম নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঈদে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে।এখানকার অস্থায়ী দোকানগুলোতে আচার, ফুচকা, হালিমসহ বিভিন্ন পানীয় পান করছেন দর্শনার্থীরা।
ব্রিজে আসা দর্শনার্থী উম্মে হাবিবা সুমি নামের এক শিক্ষিকা জানান, সন্তানদের নিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার জন্য তিনি এখানে এসেছেন। এখান দৃশ্য বেশ উপভোগ্য বলেও জানান তিনি।