ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় সদ্য বিজয়ী ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ মাস্টারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তাপ-উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। হত্যাকারী আরিফ মিয়াকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয়রা। অবরোধে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে এলাকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের লক্ষ্মীপুর বাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে জনতা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই সড়ক অবরোধ। অবরোধ চলাকালে লক্ষ্মীপুর বাজারের একটি ক্লাব ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধরা।
বিক্ষোভকারীরা সড়কের এক কিলোমিটার পথজুড়ে অবস্থান নেন। এ সময় তারা বিভিন্ন জায়গায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এতে সড়কের উভয় পাশে কয়েক শ’ যানবাহন আটকা পড়ে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। বর্তমানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আব্দুর রউফ তার বন্ধু রুহুল আমিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে বাড়ির কাছাকাছি একটি ভাঙা ব্রিজ পায়ে হেঁটে পার হচ্ছিলেন তারা। সে সময় একই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে আরিফ মিয়া লোহার রড দিয়ে আব্দুর রউফের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রউফের মাথায় কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যায় আরিফ। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন রউফকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নেয়। পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুর রউফ। এ ছাড়া তিনি লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। আব্দুর রউফ গোবিন্দপুর মাগুরাকুটি গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে।
এ দিকে, ঘটনার জেরে শুক্রবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাগুরের কুটি গ্রামের অভিযুক্ত আরিফ মিয়ার বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। আগুনে দুটি ঘর ও বেশ কিছু আসবাব পুড়ে যায়।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আব্দুর রউফের ওপর হামলা করেছে আরিফ মিয়া। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন