অবৈধ ক্লিনিকের ছড়াছড়ি

গাইবান্ধায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর এসব সেন্টারে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। অনেক সময় ভুল রিপোর্টের কারণে চিকিৎসার ব্যাঘাত ঘটছে।
জানা যায়, কাগজপত্রে সাত উপজেলায় ১৬৭টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য থাকলেও বাস্তবে এর সংখ্যা দ্বিগুণ। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে মাত্র ৭১টির। আবার নিবন্ধন থাকলেও নবায়ন করা হয়নি অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের।
১০ শয্যার অনুমতি নিয়ে কিছু ক্লিনিক খোলা হলেও অতিরিক্ত শয্যা বসিয়ে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে ব্যবসা করছে অনেক ক্লিনিক। আর এসব চলছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক অবকাঠামো ও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই। এসব চিকিৎসাকেন্দ্রে নোংরা পরিবেশ, অদক্ষ নার্স ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই চলছে মনগড়া চিকিৎসাব্যবস্থা। এতে চরম ভোগান্তি, অর্থনৈতিকভাবে প্রতারিত ও স্বাস্থ্য শঙ্কায় পড়েছে জেলার প্রায় ১৮ লাখ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, একটি ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যেসব নিয়মকানুন মেনে চলা দরকার, তা যেন শুধু কাগজ-কলমেই। বেশির ভাগ হাসপাতালে নেই প্রসূতি বিশেষজ্ঞ, অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার ও সার্বক্ষণিক ডাক্তার। আবার সার্জারি বিশেষজ্ঞ না হয়েও অনভিজ্ঞ ডাক্তার কিংবা আয়া-বুয়া দিয়ে করা হচ্ছে নানা ধরনের অপারেশন এবং দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসাব্যবস্থা। কোনো কোনো ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মেডিকেলে পড়ুয়া ছাত্র কিংবা ফিজিওথেরাপিস্ট দিয়ে চিকিৎসা চালাচ্ছেন।
অনুমোদনবিহীন হাসপাতালগুলো বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ওষুধের দোকানদার কিংবা দালাল নিযুক্ত করে কমিশনের মাধ্যমে রোগী হাতিয়ে নিচ্ছেন। ভালো-মন্দ বিচার না করেই যত্রতত্র গড়ে ওঠা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগী পাঠাচ্ছে দালাল ও ফার্মেসিগুলো। ভুল চিকিৎসার কারণে কখনো কখনো এসব চিকিৎসাকেন্দ্রে মারা যাচ্ছেন রোগী।
ফলে মাঝেমধ্যে রোগীর স্বজনেরা প্রায়ই হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করছে এসব চিকিৎসাকেন্দ্র। এতে লোকজন হয়রানির পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আ ম আখতারুজ্জামান জানান, কয়েকটি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। এসব অবৈধ ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে এবং অনিয়ম পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্র: আজকের পত্রিকা